"এখানে যদি চাকরি না পেতে তাহলে বারে গিয়ে ডান্স করতে হতো তোমাদের, তোমাদেরকে আমি চাকরি দিয়েছে। প্রত্যেক মহিলা শিক্ষাকর্মীদের সামনেই তিনি কথা বলেছেন বলে জানান কলেজ শিক্ষিকা মৌমিতা সেনগুপ্ত। এমনকি শিক্ষক সংগঠনে যুক্ত না হওয়ার হুমকি দিয়েছেন অধ্যক্ষ বলেও তিনি অভিযোগ করেন। কলেজ অধ্যাপক দেবাশীষ সিনহা মহাপাত্র কলেজের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে সরাসরি স্বৈরাচারীর অভিযোগ তুলেন। তিনি অভিযোগ করেন, অসামাজিক আচরণ যে সব জিনিস শিক্ষা ক্ষেত্রে চলে না সেই সব জিনিস উনি তৈরী করে রেখেছেন। কে কখন কোথায় গেল সব সিসিটিভি ক্যামেরায় নজরদারী চালাচ্ছেন এমনকি বার্থরুমে পযর্ন্ত সিসিটিভি লাগাবো, কেউ কোথাও পালিয়ে যেতে পারবে না। এইসব করে তিনি কলেজের মধ্যে এক ভয়ের বাতাবরন করে রেখেছে। আমরা চাই তার এই স্বৈরাচারী কাজের ইতি হোক।
কলেজ প্রতিষ্ঠান ভেতরে কলেজ অধ্যক্ষ এক প্রকার স্বৈরাচারী শাসন চালাচ্ছে শুধু তাই নয় সহকর্মীদের প্রতিও তিনি আপত্তিকর বাক্য প্রয়োগ করে থাকেন। দীর্ঘ দিন ধরে চলে আসা অধ্যক্ষের এই তুঘলকি শাসনের প্রতিবাদে মঙ্গলবার সরব হলেন জলপাইগুড়ি শহরের আনন্দ চন্দ্র কলেজ অফ কর্মাস এর শিক্ষক এবং অশিক্ষক কর্মীরা। কলেজ বারান্দায় দাড়িয়ে তারা অধ্যক্ষের অপসারণের দাবিতে স্লোগান দিতে থাকে। আন্দোলনকারী শিক্ষকদের অভিযোগ এমনকি তার বিরুদ্ধে গেলে তিনি মোবাইলে নানা বিধ হুমকিও দিয়ে থাকে, কলেজ অধ্যক্ষ একটি ভয়ের পরিবেশ তৈরী করে একছত্র আদিপত্য কায়েম করতে চাচ্ছে এতে কলেজের শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে বলে দাবী করেছে আন্দোলনকারী শিক্ষাকর্মীরা। এদিকে এই বিষয় সিদ্ধার্ত সরকারকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, যারা এই ধরনের অভিযোগ তুলেছেন তারা থানায় গিয়ে ও উচ্চ শিক্ষা দপ্তরে অভিযোগ করতে পারেন, তাছাড়া সমস্ত কিছু মৌখিক অভিযোগ। মঙ্গলবার বিকেলে জলপাইগুড়ি শহরের আনন্দ চন্দ্র কলেজ অফ কমার্সে কলেজের এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বাস্তবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিবেশ সম্পর্কে প্রশ্ন উঠে গেল বলে মনে করছে শহরের শিক্ষা মহল।
এদিন কলেজের শিক্ষা কর্মীদের থেকে পাওয়া খবরে জানা গেছে কলেজ অধ্যক্ষ প্রায় সমস্ত সহকর্মীদের সাথে অত্যন্ত দুর্ব্যবহার করে থাকেন। তার বিরুদ্ধে কথা বললে চাকরি থেকে অপসারণ করে দেওয়ার হুমকি দেন। কলেজ শিক্ষক পিনাকি চক্রবর্তী বলেন, অধ্যক্ষের আচার-আচরণ নিয়ে সহকর্মীরা প্রতিবাদ জানিয়েছে, আমিও তাদের পাশে দাঁড়িয়ে ছিলাম যার জন্য গত সপ্তাহে থেকে আমাকে হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন অধ্যক্ষ এবং নানা ভাষায় গালিগালাজ করেছেন, এমনকি কলেজের প্রিন্সিপাল নিজে ক্যাবিনেটে ডেকে যা নয় তাই বলে গেছেন। পাশাপাশি তিনি আরো অভিযোগ করে বলেন গতকাল সন্ধ্যা ছয়টা - সাতটা নাগাদ যখন আমি বেগুন্টারি মোড়ে দাঁড়িয়ে ছিলাম সেখানে হঠাৎ করে উনি বাইক নিয়ে এসে আমার সামনে দাঁড়িয়ে হুমকি দেন যে কালকেই তোকে কলেজ থেকে বের করে দেব, দিন দিন এসব ঘটনায় আমি অত্যন্ত শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ছি এবং আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে। এইসবের জন্য যদি কখনো আমার রাস্তাঘাটে কোনো কিছু ঘটে তাহলে এর জন্য এই অধ্যক্ষ দায়ী থাকবে।
এদিকে তার বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবী করেছে সিদ্ধার্ত সরকার। তিনি উল্টে দাগ দাগলেন কলেজের স্টাফদের বিরুদ্ধেই। এমনকি কলেজে তার প্রানহানী হতে পারে বলে তিনি অভিযোগ করেন। এদিকে তার বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগের প্রমাণও দিতেও তিনি বলেন। আন্দোলনকারী শিক্ষাকর্মীদের কটুক্তি করে তিনি বলেন পদত্যাগ তো আমি কারো কথা মতো করব না, উচ্চ পর্যায়ের দপ্তর থেকে যদি আমাকে পদত্যাগ করতে বলেন তাহলে করব। পাশাপাশি তিনি আন্দোলনকারী শিক্ষককর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন আমি সময় মতো কলেজে আসি এবং সময় মতো যাই এর ফলে হয়তো অনেকের সমস্যা হতে পারে, যারা এই ধরনের অভিযোগ তুলেছেন তারা থানায় গিয়ে ও উচ্চ শিক্ষা দপ্তরে অভিযোগ করতে পারেন, তাছাড়া সমস্ত কিছু মৌখিক অভিযোগ। এদিকে অধ্যক্ষ পদত্যাগ না করলে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার হুশিয়ারি দিয়েছে কলেজের আন্দোলনকারি শিক্ষক - অশিক্ষক কর্মীরা। সব মিলিয়ে পরিস্থিতি এখন কোন দিকে যায় তা সময় বলবে।