জলপাইগুড়ির মোহিতনগর এলাকার গৌরীহাটের করলা নদীর ওপর সেতুর ভগ্নদশা অবস্থা দীর্ঘদিনের। জীবনের ঝুকি নিয়ে এভাবেই পারাপার করছেন বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষ যা নিয়ে বর্তমানে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। গৌরী হাট লাগোয়া একমাত্র করলা সেতুটির জরাজীর্ণ অবস্থা। ওর মধ্য দিয়েই অগনিত মানুষের চলছে যাতায়াত। যখন তখন বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন এলাকার বাসিন্দারা।
গৌরী হাট যাত্রী বিলাশ বর্মন বলেন, দীর্ঘ বছর ধরেই সেতুটি একেবারেই বেহাল হয়ে পড়ে আছে। সেতুর মাঝখানে বসে গেছে। দুইপাশে রেলিং নেই। সেতুর পাশেই গৌরী হাট। প্রতিবছরে এই সেতুটি কেন্দ্র করে করলা নদীতে বারুণী মেলার স্নান হয়। প্রচুর মানুষের সমাগম ঘটে। স্কুল, কলেজ ছাত্র ছাত্রী ছাড়াও অফিস আদালত, হাসপাতালে যাওয়ার একমাত্র গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা। বর্তমানে সেতুটির এতটাই শোচনীয় অবস্থা যে এই এলাকায় যদি আগুন লাগে তাহলে দমকলের গাড়িও পারাপার হতে পারবে না বলে জানান স্থানীয়রা।
স্থানীয় বাসিন্দা অনিমেষ রায় বলেন, সেতুর সামনে সাইনবোর্ডে লেখা আছে ভারী যানবাহন যাতায়াত নিষেধ। তা সত্বেও ভারী গাড়ি এই দিক দিয়েই যাচ্ছে। অন্যদিকে ওই এলাকার গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য সঞ্জীব কর্মকার বলেন, জলপাইগুড়ির অরবিন্দ গ্রাম পঞ্চায়েত ও পাতকাটা গ্রাম পঞ্চায়েতের মাঝখানে গৌরীহাটের করলা সেতুটির বেহাল অবস্থা সম্পর্কে প্রশাসনের প্রতিটি দপ্তরে আবেদন করা হয়েছিল। সেই মতে টেন্ডারও হয়েছে। এমনকি শিলান্যাসও করা হয়েছে। দফায় দফায় প্রশাসনিক কর্তারা এবং ইঞ্জিনিয়াররা দেখে গেছেন। সামনেই পঞ্চায়েত নির্বাচন। ভোটের আগে সেতু তৈরী না হলে অনেক বিরোধী নেতারা এই সেতু নিয়ে রাজনীতি করবেন। আমরাও চাই দ্রুত এই সেতুর কাজ সপুর্ণ করা হোক ।
এবিষয়ে জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদের সহকারি সভাধিপতি দুলাল দেবনাথ বলেন, সেতু নিয়ে কিছু জমি সমস্যা ছিল। যার দরুন কাজ থমকে দাড়িয়েছিল। এখন সমস্যার সমাধান হয়েছে। শীঘ্রই সেতু তৈরী কাজ শুরু হবে বলে তিনি জানান। বিষয়টি নিয়ে তীব্র কটাক্ষ করেছেন জলপাইগুড়ি শহর ব্লক কংগ্রেস সভাপতি অম্লান মুন্সী। তিনি বলেন বড় কোন দুর্ঘটনা হলেই শাসক দলের নেতা-মন্ত্রীরা ছুটে আসবেন। তার আগে তারা কিছুই করবেন না।
অন্যদিকে এই বিষয়ে বিজেপির জেলা সম্পাদক শ্যাম প্রসাদ টেলিফোনে জানান, যে সকল সেতু ও রাস্তা তৈরি হয়েছে তা কেন্দ্রীয় সরকারের উদ্যোগে। এই সেতুটির অবস্থা ভয়ানক। যখন তখন কোন দুর্ঘটনা ঘটে যে কেউ মারা যাবেন, তখনই সরকার ছুটে এসে দুই লক্ষ টাকা ঘোষণা করবেন বলে তীব্র কটাক্ষ করেন তিনি।